এসইও শিখতে চান? যে যেভাবে শিখতে পারেন! A to Z

আসসালামুয়ালাইকুম!!!!!
সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন হচ্ছে এমন একটা প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে সার্চ ইঞ্জিনগুলো (যেমন গুগল এবং বিং) থেকে ওয়েবসাইটের জন্য টার্গেটেড ফ্রি ট্রাফিক বা ভিজিটর আনা যায়। সার্চ ইঞ্জিন থেকে ট্রাফিক পাওয়ার উপর একটা সাইটের সাফল্য অনেকটাই নির্ভর করে, হতে পারে সাইটটি এডসেন্স কিংবা এফিলিয়েট মার্কেটিংকে টার্গেট করে কিংবা নিজস্ব পন্য বা সেবা বিক্রি করার জন্য। অনলাইনে সফল প্রায় সকল ওয়েবসাইটই এসইও এর মাধ্যমে অধিকাংশ ট্রাফিক পেয়ে থাকে। ওয়েবসাইটে যত বেশি ট্রাফিক আসবে সেখানে প্রোডাক্ট বিক্রয় কিংবা সেবা প্রদানের হার তথা আয় বাড়ার সম্ভাবনা তত বেশী। কথাটি চিরন্তন সত্য, ট্রাফিক=রেভিনিউ!
সার্চ ইঞ্জিনগুলো সেসব ওয়েবসাইটকেই প্রথমে প্রদর্শন করে সেগুলোকে বিভিন্ন নীতিমালা অনুসরণ করে প্রথম দিকে রাখে। এক কথায় বলা যায়, সার্চ ইঞ্জিন যেভাবে একটি কনটেন্টকে দ্রুত খুঁজে পেতে পারে, সহজে পড়তে পারে এবং ইউজারের সার্চ অনুসারে সবার উপরে অর্থাৎ প্রথম পাতায় দেখাতে পারে সে ধরণের বিজ্ঞানসম্মত ব্যবস্থা করার সামষ্টিক প্রক্রিয়াকেই সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন বলা হয়।
Method
এসইও শিখে বিশ্বব্যাপী আকর্ষনীয় ক্যারিয়ার গঠনের করার সুযোগ রয়েছে। যেমন ব্লগিং এফিলিয়েট মার্কেটিং কিংবা নিজস্ব ব্যবসা দাড় করানোর মধ্যমে। সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন শেখা ছাড়া কোনভাবেই এ ক্ষেত্রগুলোতে সফলতা পাবেন না। আর ফ্রিল্যান্সিংয়েও এসইওর প্রচুর চাহিদা রয়েছে। ওডেস্ক.কম বা ফ্রিল্যান্সার.কম এর মতো অনলাইন মার্কেটপ্লেসে প্রতিমূহুর্তে সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন বিষয়ক শত শত প্রজেক্ট আসছে। কাজ জানা থাকলে যে কেউ সে কাজগুলো করে। বাংলাদেশী দেশে এসইও নিয়ে অনেকেই কাজ করছেন, যারা সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজার হিসেবে গড়ে তুলেছেন সময়ের স্মার্ট ক্যারিয়ার। বেশ সফলও বটে তারা। যথাযথ গাইডলাইন নিয়ে শুরুতে শিখে কাজ নামতে পারলে ক্যারিয়ার মসৃণ হবে তাতে কোন সংশয় নেই।

এসইও বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ন বিষয় আছে যা ধাপে ধাপে শিখতে হয়।

  • সার্চ ইঞ্জিন কিভাবে কাজ করে এবং SEO মেথড
  • কিওয়ার্ড রিসার্চ
  • সার্চ ইঞ্জিন ফ্রেন্ডলী সাইট তৈরি
  • কনটেন্ট ডেভেলপমেন্ট প্লান
  • অনপেজ অপটিমাইজেশন
  • গুগল ওয়েবমাষ্টার টুল এবং এনালাইসিস
  • লিঙ্ক বিল্ডিং ষ্ট্র্যাটেজি এবং লিঙ্ক বিল্ডিং মেথড
  • সার্চ ইঞ্জিন র‍্যাকিং ফ্যাক্টর
  • লিঙ্ক মনিটরিং এবং রিপোর্টিং,
  • সাইট অডিট রিপোর্ট
  • স্যোসাল সিগন্যাল
  • গুগল অ্যালগরিদম আপডেট বিস্তারিত
তবে সবাইকে অনুরোধ করবো শুরুতেই গুগল কতৃক প্রকাশিত সার্চ ইঞ্জিন অপ্টিমাইজেশন স্টার্টার গাইডটি পড়ে নেওয়ার জন্য, পুরো এসইও প্রসেসকে বুঝতে যথেষ্ট সহায়তা করবে।

সার্চ ইঞ্জিন কিভাবে কাজ করে এবং SEO মেথড

সার্চ ইঞ্জিন কিভাবে কাজ করে জানতে গুগলে সার্চ করে বিভিন্ন আর্টিকেল পড়তে পারেন পাশাপাশি ইউটিউবে সার্চ করে ভিডিও দেখা যেতে পারে।
আপনাদের সাহায্যের জন্য নিচের লিংক গুলো দেখুন।

সার্চ ইঞ্জিন ফ্রেন্ডলী সাইট তৈরি

কনটেন্ট ডেভেলপমেন্ট প্লান অনুযায়ী আপনার সাইটের স্ট্রাকচার তৈরি করতে হবে যা হতে হবে সার্চ ইঞ্জিন ফ্রেন্ডলি। প্রতিটা পেজের  ক্রলাভিলিটী ও ভিজিবিলিটি নিশ্চিত করতে কাজ করতে হবে। সাথে কন্টেন্ট টার্গেট করে কিওয়ার্ড অপটিমাইজেশন করতে হবে। ‎এসইও'তে ‪অনপেইজ কোয়ালিটি সিগনালের গুরুত্ব এখন অনেক বেশি। আর তাই ওয়েবপেইজ এবং কনটেন্ট কোয়ালিটি নিয়ে অনেক বেশি চিন্তায় থাকেন অপ্টিমাইজাররা। ওয়েবপেইজটি এবং ওটার কনটেন্ট কেমন হলে সেটিকে কোয়ালিটি কনটেন্ট বা ওয়েবপেইজ বলা যাবে তা নিয়ে এসইও গুরুরা নানা ধরণের পরামর্শ দেন। তবে সার্চ ইঞ্জিন জায়ান্ট গুগল আসলে কিভাবে একটি ওয়েবপেইজের কোয়ালিটি নিরুপণ করে? গুগলের একজন কর্মকর্তা গতবছর এ সংক্রান্ত একটি গাইডলাইন ফাঁস করে দিয়েছিলেন! এ নিয়ে বেশ সাড়া পড়ে যায় ওয়েব দুনিয়ায়। তবে কয়েকবার ফাঁস হওয়ার পর গুগল নিজেই এই ডকুমেন্টটি পাবলিক করে দেয়। 

কিওয়ার্ড রিসার্চ ও কম্পিটেটর এনালাইসিস পদ্বতি

সার্চ ইঞ্জিনের মাধ্যমে ব্লগে প্রমোট বা অ্যাফিলিয়েট করা পণ্য বা সেবা সম্পর্কে আপনার প্রকাশিত কনটেন্ট এ ভিজিটর আনতে, পরোক্ষভাবে অ্যাফিলিয়েট পণ্য বিক্রি করতে কিওয়ার্ড রিসার্চ একটি জরুরী বিষয়।
কিওয়ার্ডের রিসার্চের ধাপগুলো হবে এমন
  • কিওয়ার্ড সাজেশন
  • ব্রেইনস্ট্রমিং
  • কিওয়ার্ড ফিল্টারিং
  • কিওয়ার্ড গ্রুপিং
  • কম্পিটিটর সাইট এনালাইসিস
  • কিওয়ার্ড ফাইনালিজ
আপনি কিওয়ার্ড রিসার্চ টুলের মাধ্যমে পছন্দের পণ্যটির ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা পেতে পারেন। বেশি কিছু ফ্রি টুলস আছে কিওয়ার্ড রিসার্চের। এর সবচেয়ে প্রধান কাজ হলো একটি লাভবান কিওয়ার্ড খুঁজে বের করা।
keyword-research

ভালো কিওয়ার্ডের বৈশিষ্ট্য সমুহ

  • পণ্য বা সেবা সংশ্লিষ্ঠ কিওয়ার্ড হতে হবে
  • ফ্রেজিয়াল সার্চ কেমন হয় সেটাও দেখা জরুরি
  • কিওয়ার্ডটির অনেক চাহিদা থাকতে হবে বিশেষ করে একশন কিওয়ার্ড
  • সার্চে ঐ বিষয়ে যত কম রেজাল্ট দেখাবে তত ভালো
  • কিওয়ার্ডটির কম্পিটিশন কম থাকা বাঞ্চনিয়
  • সার্চ ইঞ্জিনে প্রতিযোগিতায় অবশ্যই সহজভাবে জিততে হবে।

কিওয়ার্ড রিসার্চ টুলস


গুগল ওয়েবমাষ্টার টুল এবং এনালাইসিস

ওয়েব সাইটকে সার্চ ইঞ্জিনে আরও ভালো ভাবে কাজ করনোর লক্ষ্যে গুগল ওয়েব মাস্টার নামক টুলস ব্যবহার করার পরামর্শ দেয়। এবং ওয়েব সাইটের পারফরমেন্স মনিটরিং করার জন্য গুগল এনালিটিক্স ইউজ করতে বলে। কিভাবে শিখবেন জানতে চান? নিচের ভিডিও দুটো দেখুন
http://www.youtube.com/watch?v=TL9zhUKsnvU
http://www.youtube.com/watch?v=mm78xlsADgc

লিঙ্ক বিল্ডিং ষ্ট্র্যাটেজি এবং লিঙ্ক বিল্ডিং মেথড

সাইটের গুরুত্ব ও গ্রহনযোগ্যতা বাড়াতে লিংক বিল্ডিং এর কোন বিকল্পই হয় না। এক একটি ব্যাকলিংক এর মাধ্যমে বাড়বে আপনার পপুলারিটি যা আপনার জন্য ভোট স্বরূপ। এর জন্য সার্চ ইন্জিন সবসময় খুজে বেড়ায় কোন সাইটের ব্যাকলিংক বেশি।

সার্চ ইঞ্জিন র‍্যাংকিং ফ্যাক্টর

প্রতিটা সার্চ ইঞ্জিন তাঁদের নিজস্ব নিয়ম নীতি মেনে ওয়েব সাইটকে প্রথম পেজে ঠাই দেয়, এই নিয়ম নীতি গুলোকে সামষ্টিক ভাবে সার্চ ইঞ্জিন র‍্যাংকিং ফ্যাক্টর বলা হয়।
Ranking factor
জনপ্রিয় সার্চ ইঞ্জিন গুগলের প্রায় ২০০ এর ও অধিক সার্চ ইঞ্জিন ফ্যাক্টর রয়েছে। প্রত্যেক এসইও অপ্টিমাইজারকে এই ফ্যাক্টরগুলো মেনে সাইট র‍্যাংক করাতে হবে।

সাইটের এসইও অডিট রিপোর্ট

কোন একটা সাইটের এসইও’র কাজ শুরু করার আগে প্রত্যেকটা বিষয় পুংখানুপুঙ্খ রূপে এনালাইসিস করতে হয়। সাইটটার উদ্দেশ্য কি? কিওয়ার্ড ব্যবহার ও টার্গেটেড কন্টেন্ট ঠিক আছে কিনা? এছাড়াও পুরো সাইটে এবং বিভিন্ন পেজগুলো অপটিমাইজ কিনা চেক করতে হয়। পাশাপাশি লিংক বিল্ডিং করা আছে কিনা এটাও জানার প্রয়োজন হয় আর তাই সাইটের এসইও অডিট রিপোর্ট তৈরি করতে হয়। কিভাবে সাইটের এসইও অডিট করতে হবে সেটার একটা টেম্পলেট দিলাম এখানে

স্যোসাল সিগন্যাল

বর্তমানে এসইও’তে একটি সাইটকে ভালো অবস্থানে নিয়ে আসতে হলে অবশ্যই স্যোসাল মিডিয়া যেমন ফেসবুক, গুগল প্লাস, টুইটার, পিন্টারেস্ট প্রভৃতি সাইটকে গুরুত্ব দিতে হবে।
social signal
গত বছর গুগল জোরেসরে সার্চ ইঞ্জিনে সাইট র‍্যাংকিং এর ক্ষেত্রে স্যোসাল সিগন্যাল এর ভূমিকা স্পষ্ট করেছে। তাই স্যোসাল সিগন্যাল ফলো করতে হবে। স্যোসাল সিগন্যাল বিষয়ে জানতে এই লিংকটা দেখুন

গুগল অ্যালগরিদম আপডেট বিস্তারিত

প্রতি বছর গুগল ৫০০ এর অধিক ছোট বড় আপডেট করে থাকে, যা গুগলের অ্যালগরিদম আপডেট নামে পরিচিত। অ্যালগরিদম আপডেট করার মাধ্যমে গুগল ইউজারকে ১০০% প্রায়োরিটি দিয়ে সার্চ রেজাল্টকে আরও ইম্প্রুভ করতে চায়। ২০১১ সালে গুগল পান্ডা আপডেটে মাধ্যমে সার্চ রেজাল্টে প্রায় ৩৮ % পরিবর্তন। এছাড়াও স্পামারদের শায়েস্তা করতে গুগল ২০১২ সালে পেঙ্গুঈন আপডেট করে। গুগল অ্যালগরিদম আপডেট এর বিস্তারিত জানতে এই লিংকটি ফলো করুন।
এসইও ফিল্ডে নিয়মিত আপ-ডু-ডেট থাকতে হয়, আপডেট জানতে নিয়মিত ভিজিট করুন এই সাইটগুলো:
চেষ্টা করলাম এসইও শেখায় এ টু জেড শেয়ার করতে, যে রিসোর্সগুলো দিয়েছি সেগুলো ভালভাবে পড়ে দেখুন। একজন সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজারের জন্যে এগুলো খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কোন প্রশ্ন থাকলে কমেন্টে জানাতে পারেন।

প্রিয় পাঠক, পোস্টটি পড়ার পর আপনার ভালো লাগা, মন্দ লাগা, জিজ্ঞাসা কিংবা পরামর্শ প্রদানের জন্য দয়া করে গঠনমূলক মন্তব্য প্রদান করুন। যা আমাদের ব্লগিং চালিয়ে যেতে অনেক উৎসাহ অনুপ্রেরণা জাগাবে। আর প্রাসঙ্গিক যেকোন প্রশ্নের সমাধান পেতে মেইল করুন contact@projukte.com ঠিকানায় অথবা অধিক জরুরী প্রয়োজনে কল করুন ০১৭৫৪৭২০২৫৫ নম্বরে। আপনার একটি মন্তব্যই আমাদের নিকট অনেক মূল্যবান। সাথেই থাকুন প্রযুক্তি ডট কম বাংলা ব্লগের সাথে।
ধন্যবাদান্তে,
প্রযুক্তি ডট কম

আপনার মূল্যবান মন্তব্য প্রদানের জন্য ধন্যবাদ